আমরা সকলেই জানি ভ্যাকসিন মূলত ইনজেকশনের মাধ্যমে মানবদেহে প্রয়োগ করা হয়। সম্প্রতি MIT এর গবেষকরা, গিলে খাওয়া যায় এমন ট্যাবলেট জাতীয় আর.এন.এ ভ্যাকসিন বানাতে সক্ষম হয়েছেন যা পরবর্তীতে খুব সহজে পাকস্থলিতে পৌঁছে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল রোগ যেমন আলসারের চিকিৎসা ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
জিওভেনি ট্রাভারসোর মতে, আর.এন.এ এর মতো নিউক্লিক এসিড গুলো পাকস্থলিতে উপস্থিত কিছু এনজাইমের মাধ্যমে খুব সহজে ভেঙ্গে যেতে পারে। আর এই প্রতিবন্ধকতাকে এড়াতেই গলধঃকরণ সম্ভব এমন ভ্যাকসিনের আবিষ্কারের চেষ্টা চলছে।
পূর্ববর্তী কিছু ঘটনা বিবেচনা করে দেখা যায়, ২০০৯ সালে ক্যাপসুল ব্যবহার করে পাকস্থলিতে ইনসুলিন তৈরীর রিসেপ্টার প্রতিস্থাপন সম্ভব হয়েছিল। শুধু তাই-ই নয় গবেষকেরা ২০২১ সালে ক্যাপসুল ব্যবহার করে তরল অবস্থায় মনোক্লোনাল অ্যান্টিবডি প্রতিস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছেন।
তারপর থেকে তাদের চেষ্টা শুরু হলো ক্যাপসুল ব্যবহার করে নিউক্লিক এসিড সরবারহের। কিন্তু পাকস্থলিতে উপস্থিত এনজাইমের মাধ্যমে যেহেতু খুব সহজে নিউক্লিক এসিড (আর. এন.এ) ভেঙ্গে যেতে পারে তাই কিছু প্রতিরক্ষামূলক আবরণের ব্যবহার আবশ্যক। আর সেই প্রতিরক্ষামূলক আবরণ হিসেবে পলি বেটা অ্যামিনো এস্টার ব্যবহার করা হয়েছিল।
গবেষকেরা প্রথমে প্রতিরক্ষামূলক আবরণে বেষ্টিত আর. এন.এ কে ইনজেকশনের মাধ্যমে ইঁদুরের পাকস্থলিতে প্রবেশ করান। প্রবেশকৃত আর. এন.এ কিছু রিপোর্টার প্রোটিন তৈরি করে যেটা কিনা বিভিন্ন টিস্যুতে লক্ষ্য করা যাবে যদি সেই টিস্যুর সেল গুলো প্রবেশকৃত আর. এন.এ কে গ্রহণ করতে পারবে। গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, প্রবেশকৃত আর. এন.এ এর মাধ্যমে তৈরিকৃত রিপোর্টার প্রোটিনের উপস্থিতি ইঁদুরের পাকস্থলি-সহ লিভারেও লক্ষণীয়।
এরপর গবেষকরা জটিল আর.এন.এ ন্যানোপার্টিক্যালকে ফ্রিজ-ড্রাইড করে ক্যাপসুলে প্রবেশ করান। প্রতি ক্যাপসুলে ৫০গ্রাম প্রবেশ করানো হয়। তারপর ৩টা ক্যাপসুল শুকরের পাকস্থলিতে প্রবেশ করানো হয়। এর ফলে গবেষকেরা লক্ষ্য করলেন যে, প্রবেশকৃত আর.এন.এ পাকস্থলিতে রিপোর্টার প্রোটিন তৈরি করতে সক্ষম হয়েছে।
এই গবেষণার পর গবেষকরা চেষ্টা করছেন, একই পদ্ধতিতে এম.আর.এন.এ কে মানবদেহে সরবরাহ করতে।
তথ্যসূত্র: https://scitechdaily.com/new-way-to-administer-vaccines-a-pill-that-injects-rna-in-the-stomach/amp/
তানজিয়া কায়সার
ব্রাক ইউনিভার্সিটি
Leave feedback about this